মোঃ শরিফ উদ্দিন, শেরপুর প্রতিনিধি: খেজুরের রস-গুড়ের জন্য দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর খ্যাতি থাকলেও সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরে খেজুরের চাষ হয় না তেমন। ফলে খেজুরের রসও এখানে দুর্লভ। তবে এবার শেরপুরে মিলছে খেজুরের রস। আর এই রস পান করতে ভোর থেকে আগ্রহীরা ভিড় জমা”েছন।

জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার মধুটিলা যাওয়ার পথে সড়কের দুধারে দেখা মিলবে এসব খেজুর গাছের সারি। পরিচর্যার ফলে ওই গাছগুলোতে এবার মিলছে রস। রসের খবর ছড়িয়ে পড়েছে পুরো জেলাজুড়ে। ফলে টাটকা খেজুরের রস পান করতে ভোর থেকে পিপাসুরা ছুটে আসছেন এই এলাকায়। ¯’ানীয়রা জানান, খেজুর গাছগুলো অনেক বছর যতেœর অভাবে পড়েছিল। যদিও কয়েক বছর ধরে পরিচর্যা করা হ”েছ। এই পরিচর্যার ফলেইএবার রস এসেছে। এছাড়াও নন্নী এলাকার আরও বেশ কিছু বাড়িতে খেজুর গাছ থেকে রস নামানো হ”েছ বলে জানান তারা।

খেজুরের রসপান করতে গত এক সপ্তাহ ধরে ভোর থেকে ভিড় করছেন সৌখিন পিপাসুরা। গত শনিবার ভোরে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভোর হওয়ার আগেই রস পিপাসুরা এসেছেন খেজুরের টাটকা মিষ্টি রস পান করতে। ভোরে সদর উপজেলার পৌর শহরের মোবারকপুর মহল্লা থেকে কয়েকজন বন্ধু নিয়ে রস পান করতে এসেছেন মেহেদী হাসান হৃদয়। তিনি বলেন, খেজুর রসের কথা অনেক শুনেছি। কিš‘ কোনো দিন গাছ থেকে নামানো টাটকা রস পান করিনি। ফেসবুকে দেখলাম এখানে খেজুরের রস পাওয়া যায়। তাই আজ বন্ধুদের নিয়ে পান করতে আসলাম।

মেহেদী হাসানের মতো এখানে আসা কয়েকজন তরুণ প্রথমবার গাছ থেকে নামানো টাটকা খেজুরের রসের স্বাদ গ্রহণ করেন এদিন। এদের মধ্যে রয়েছেন শেরপুর শহর থেকে আসা শিক্ষার্থী খোকন আহমেদ ও তার বন্ধুরা। খোকন বলেন, খেজুর রস সম্পর্কে বইয়ে পড়েছি। অনেক গল্প শুনেছি। আজই প্রথম গাছ থেকে নামানো টাটকা রস পান করলাম এটি

খুবই চমৎকার অভিজ্ঞতা। স্মৃতি হয়ে থাকবে। যদিও শীতের সকালে আসতে কষ্ট হয়েছে। ¯’ানীয়রা জানান, এখানকার গাছ থেকে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ লিটার রস পাওয়া যায়। একটি গাছ থেকে দুই দিন পরপর রস সংগ্রহ করা হয়। মাটির হাঁড়ি ও প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা মহয়। প্রতি গøাস খেজুরের রস ১০ টাকা করে বিক্রি করা হয়। গাছি আক্কাছ আলী বলেন, এখানে বেশ কিছু খেজুরগাছ রয়েছে।

এরমধ্যে সবগুলো থেকে রস নামানো যায় না। তেমন একটা লাভ না হলেও এটা একটা সৌখিনতা। লোকজন আসে, ভালো লাগে। তিনি আরও বলেন, আমরা নিপা ভাইরাস সম্পর্কেও অবগত আছি। তাই রস সংগ্রহের পাত্র যতোটা সম্ভব নেট দিয়ে ঢেকে রাখি এবং রাতে পাহারার ব্যব¯’া করি।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সুলতান আহম্মেদ বলেন, শেরপুর অঞ্চলের কৃষকদের খেজুর গাছ চাষের প্রবণতা কম। সাধারণত দেশের উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা বেশি খেজুরের চাষ করেন। পর্যাপ্ত রোদ, কম আর্দ্রতা, কম বৃষ্টিপাত এবং উষ্ণ আবহাওয়ায় চাষের জন্য উপযোগী।